Home Uncategorized বুড়ো আঙুল দেখিয়ে গাড়িতে বাতি সহ স্টিকার

বুড়ো আঙুল দেখিয়ে গাড়িতে বাতি সহ স্টিকার

0

অনেকদিন ধরেই মোটর সাইকেল বা গাড়ির সামনে পিছনে স্টিকার সাঁটার একটা প্রবণতা চল হয়েছে। ডাক্তার, পুলিশ, প্রেস তো আগে ছিলই। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মিল্ক ভ্যান, কেএমডিএ, ডাক্তার, আর্মি, এয়ারফোর্স, নেভি, প্রাক্তন সেনা, অ্যাডভোকেট, ফায়ার, ডব্লিউবিএসই ডিসিএল। এদের সঙ্গে সাম্প্রতিক  নবান্নের কর্মী, ডিএস অফিস কর্মী, জেলা জজ কার‌্যালয় কর্মী, মানবাধিকার কর্মী ইত্যাদি ইত্যাদি। এমনটাই দাবি, সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকদের। তাদের এমনও দাবি, এমনকি লাল-নীল বাতির গাড়ি ব্যবহারের ক্ষেত্রে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকেও উপেক্ষা করার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। যেখানে রাজ্যের মন্ত্রীরা লাল-নীল বাতির ব্যবহার বর্জন করেছেন, সেখানে বিভিন্ন সরকারি আধিকারিকরা আশ্চর‌্যজনকভাবে  গাড়ি অবলীলায় ব্যবহার করে চলেছেন।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এক সময় ঘোষণা করেছিলেন, প্রতিটি স্টিকার লাগানো গাড়ি, লাল-নীল বাতি লাগানো গাড়ি, এমনকি হুটার বাজিয়ে চলা গাড়িকেও যেন ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে চেক করা হয়। কারণ ইতিপূর্বে রাজ্যে অভিশপ্ত মানি মার্কেটিং-এর অন্যতম প্রথম সারির সংস্থা সারদা কোম্পানির বিরুদ্ধে রাতের অন্ধকারে পাবলিক  পাচারের ক্ষেত্রে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর রাজ্যে এই ধরনের চেকিংয়ের নির্দেশিকা জারি হয় বলে বিশ্লেষকদের অভিমত। এমনও দেখা যায় পুলিশ বা সরকারি আধিকারিকের জন্য ভাড়া নেওয়া ব্যক্তি মালিকানাধীন গাড়ি অনেক সময় সরকারি কাজে ব্যবহারের পর ওই স্টিকার বা বাতি লাগানো অবস্থায় অবসর সময়ে ভাড়ায়  হয় নির্দ্ধিধায়, বলেও সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকদের দাবি।

সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশিকা সত্ত্বেও সরকারি কাজে ব্যবহৃত গাড়িগুলিতে কোনও এক অজ্ঞাত কারণে লাল-নীল বাতি হঠানো আজও সম্ভব হয়নি। একমাত্র পুলিশ, ফায়ার আর অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া হুটার বাজানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ বলে জানান, আইনজীবীদের একাংশ। গাড়ির সামনে পিছনে জরুরি পরিষেবা প্রদানকারীদের স্টিকার লাগানোতে কোনও  নেই নীতিগতভাবে বলেও আইনজীবীদের একাংশ মনে করেন। অনেক সময় দেখা যায় অ্যাম্বুলেন্স আর জরুরি পরিষেবা থেকে ফেরার পথে রাস্তার মাঝখান থেকে সাধারণ প্যাসেঞ্জার তুলে নেয়। যা কার‌্যত বেআইনি। কেননা, এইভাবে যাত্রী তুলে নেওয়ার ফলে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে যেমন কোনও অপরাধী পাচার হয়ে যেতে পারে, তেমনই অবৈধ ও নাশকতামূলক  অতি সহজেই পাচার হতে পারে, বিশেষ করে রাজ্য জুড়ে সামনেই বাঙালিদের শ্রেষ্ঠ উত্সব, দুর্গোত্সব। ফলে পুলিশি ও প্রশাসনিক অসাবধনতা বা নজরদারির অভাবে বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়া অসম্ভব  নয় বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট সাধারণ মানুষ ও বুদ্ধিজীবী মহল।

এ প্রসঙ্গে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা সদর বারাসতের জনৈক প্রাক্তন আরটিও  প্রতিক্রিয়ায় বলেন, বিভিন্ন পেশায় যারা আছেন, তাদের পেশাগত সুবিধার্থে আইনে লেখা না থারকলেও এই স্টিকারগুলো সাঁটিয়ে তাদের পেশাগত পরিচিতির জানান দেওয়ার একটা রেওয়াজ চলে আসছে। টেশল প্লাজাতেও এই সব গাড়িগুলোর ক্ষেত্রে বলা আছে, কে কে সুবিধা পাবে। স্টিকার লাগিয়ে তো দেবাঞ্জনও ঘুরে ছিল। তবে সব বিষয়টাকে দেবাঞ্জনের সাথে গুলিয়ে  হবে না। পরিচয় পত্র যদি ঠিকঠাক থাকে তবে অসুবিধার কিছু নেই। সরকারের ভাড়া নেওয়া গাড়িতে স্টিকার লাগিয়ে যদি কোনও ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক চলাফেরা করেন সেক্ষেত্রে তো কোনও সমস্যা নেই। তবে কোনও প্রাইভেট গাড়িতে আর্মি, পুলিশ, এয়ারফোর্স, নেভি, অ্যাডভোকেট এধরনের স্টিকার লাগানোর আইন নেই। তবে সংশ্লিষ্ট কার‌্যালয় তার ভাড়া করা গাড়িতে  কর্মীর যাতায়াতের জন্য স্টিকার ব্যবহার করতে পারে। তবে এ ধরনের স্টিকার লাগানো গাড়ি বা অ্যাম্বুলেন্স লেখা গাড়ি ব্যবহার করে যদি কোনও দুষ্কৃতী কোনও অসামাজিক কাজ করে, তাহলে তার দায়টা আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য যে উচ্চ পদস্থ কর্মীকে দায়িত্বভার দেওয়া হয়েছে, তার উপরেই বর্তায়।

এ প্রসঙ্গে বারাসত পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ  (নর্থ) বিম্বচাঁদ ঠাকুর বলেন, আমাদের জেলায় যে কটা ট্রাফিক পয়েন্ট আছে সেখানে নিয়মিত চেকিং হয়। এছাড়াও নাকাচেকিং-এর ব্যবস্থাও রয়েছে। বিশেষ করে আসনন্ন উত্সবকে কেন্দ্র করে স্পেশাল নানা চেকিং চলছে। পাশাপাশি রয়েছে কড়া পুলিশি নজরদারিও। বসিরহাট পুলিশ জেলার এসডিপিও অশেষ বিক্রম দস্তিদারও ট্রাফিক গার্ডের পাশাপাশি নাকা চেকিংয়ের উল্লেখ করেন।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version