(জেলা-উত্তর ২৪ পরগনা)
দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের অধীনে বিএসএফ জওয়ানরা বিভিন্ন ঘটনায় সীমান্তে 28 টি সোনার বিস্কুট জব্দ করেছে। জব্দ করা সোনার আনুমানিক মূল্য 2,13,73,305/- টাকা। চোরাকারবারিরা বাংলাদেশ থেকে এই বিশাল চালান ভারতে আনার পরিকল্পনা করছিল।
প্রথম ঘটনায়, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখের আনুমানিক ১২৫০ ঘটিকায়, বিএসএফ সীমা চৌকি অ্যাংরেল, ০৫ ব্যাটালিয়নের জোয়ানরা তাদের দায়িত্বের এলাকায় কিছু সন্দেহজনক কার্যকলাপ সন্দেহ করে। জোয়ানরা দেখে যে এক মহিলা চোরাকারবারী হাতে ব্যাগ নিয়ে ডমিনেশন লাইনের দিকে আসছে। জোয়ানরা মহিলাকে সতর্ক করে এবং থামতে বলে। জোয়ানদের দেখে মহিলাটি ভয় পায় এবং পালানোর চেষ্টা করে, কিন্তু মহিলা প্রহরী ওই চোরাকারবারীকে ধরে ফেলে এবং তল্লাশি শুরু করে। তল্লাশির সময় তার ব্যাগ থেকে ১২ টি সোনার বিস্কুট উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় যে তার রান্নাঘরের বাগানে আরোও ১০ টি বিস্কুট আগে থেকেই লুকোনো রয়েছে । জোয়ানরা রান্নাঘরের বাগানে তল্লাশি চালিয়ে মোট ২২ টি বিস্কুট সহ ওই মহিলা পাচারকারীকে আটক করে ।
মহিলা পাচারকারীর পরিচয় -যশোদা শিকদার, স্বামী -মৃত সন্তোষ শিকদার, ২১৪ঘোসপাড়া (৫২ পল্লী), পোস্ট অফিস- আংরেল, পুলিশ স্টেশন গাইঘাটা, জেলা- উত্তর ২৪ পরগণার বাসিন্দা।
জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, সে অন্যর ক্ষেতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে প্রতিদিন ১২০ টাকা আয় করে জীবিকা নির্বাহ করে। ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে সে আলু এবং সরিষা পাতা সংগ্রহ করতে মাঠে গিয়েছিল। মজনু নামে এক বাংলাদেশি তাকে একটি ছোট প্লাস্টিকের প্যাকেট দিয়ে বাড়িতে রাখতে বলে। সে বলেছিল যে আংরেল গ্রামের বাসিন্দা গোপাল মণ্ডলের ছেলে কৃষ্ণ পদ মণ্ডল এসে ওই প্যাকেট নিয়ে যাবে। দুদিন আগেও সে একই ব্যক্তির কাছ থেকে একটি ছোট প্যাকেট নিয়ে নিজের প্রাঙ্গণে লুকিয়ে রেখেছিল কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ তা সংগ্রহ করতে আসেনি। ০৬/০২/২০২৪ তারিখে ওই বাংলাদেশী ব্যক্তির কাছ থেকে একটি প্যাকেট সংগ্রহ করে যখন সে তার বাড়িতে ফিরছিল, তখন সে বিএসএফ সদস্যদের হাতে ধরা পড়ে।
অপর একটি ঘটনায় সীমা চৌকি গোবর্ধা, ১০৭ ব্যাটালিয়নের জোয়ানরা তাদের দায়িত্ব এলাকা থেকে ০৬ টি সোনার বিস্কুটসহ এক চোরাকারবারীকে আটক করেছে।
পাচারকারীর পরিচয় সুজিত রায়, পিতা -মৃত কৃষ্ণপদ রায় (৩২ বছর), গ্রাম-নাইপাড়া (গোবর্ধা), থানা-স্বরূপ নগর, উত্তর ২৪ পরগনা, পশ্চিমবঙ্গ।
জব্দকৃত মালামাল পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
শ্রী এ কে আর্য, ডিআইজি, পাবলিক রিলেশন অফিসার, সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার জোয়ানদের এই কৃতিত্বে আনন্দ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, কুখ্যাত চোরাকারবারিরা গরিব ও নিরীহ মানুষকে অল্প পরিমাণ অর্থের প্রলোভন দিয়ে ফাঁদে ফেলে। কুখ্যাত চোরাচালান চক্র সরাসরি চোরাচালানের মতো অপরাধে জড়িত হয় না। তারা গরিব মানুষকে টার্গেট করে। তিনি সীমান্তে বসবাসকারী লোকদের কাছে আবেদন করেছেন যে তারা যদি সোনা চোরাচালান সম্পর্কিত কোনও তথ্য পান তবে তারা বিএসএফ-এর সীমা সাথী হেল্পলাইন নম্বর ১৪৪১৯ এ এই তথ্য দিতে পারেন। এছাড়াও সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার আরও একটি নম্বর ৯৯০৩৪৭২২২৭ জারি করেছে যাতে সোনা চোরাচালান সংক্রান্ত তথ্য় হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ বা ভয়েস মেসেজ করে পাঠানো যায়। সঠিক তথ্য প্রদানকারী ব্যক্তিকে উপযুক্ত পুরস্কারের পরিমাণ দেওয়া হবে এবং তার পরিচয় গোপন রাখা হবে।