Home Uncategorized ‘ডানা’র ঝাপটায় কুপোকাৎ আমন, ফলনে ক্ষতির আশঙ্কা

‘ডানা’র ঝাপটায় কুপোকাৎ আমন, ফলনে ক্ষতির আশঙ্কা

0

দেবাশিস রায়: ‘ডানা’র ঝাপটায় পূর্ব বর্ধমান জেলার বেশ কিছু অংশে আমন চাষে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ বিধ্বংসী মেজাজে আছড়ে পড়ার আগেই বুধবার থেকে দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অংশে ঝোড়ো বাতাস বয়ে যাওয়ার সঙ্গে দফায় দফায় বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে কৃষিক্ষেত্রের একাংশে। বিশেষত শাকসবজি সহ আমন চাষে। একাধিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘ডানা’র কারণে ঝোড়ো হাওয়ার ধাক্কায় পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট, ভাতাড়, আউশগ্রাম, খণ্ডঘোষ প্রভৃতি এলাকার বেশ কিছু অংশে ফলন্ত আমন ধানের চারাগাছ মাটিতে শুয়ে পড়েছে। যেগুলির মাথা তুলে দাঁড়ানোর আর সম্ভাবনা নেই। রাজ্যের ‘শস্যগোলা’ রূপে পরিচিত পূর্ব বর্ধমান জেলার কমবেশি সর্বত্র এই মুহূর্তে আমন ধান কার্যত ফলনের মুখে দাঁড়িয়ে। আমনের গোছা মোটা হওয়ার পাশাপাশি গাছে গাছে থোড় এসে গিয়েছে। কোথাও কোথাও সেই থোড় পুষ্ট হয়ে ধানের রূপ নিতেও শুরু করেছে। ঠিক এই মাহেন্দ্রক্ষণে আরও একটা ঘূর্ণিঝড় সহ দুর্যোগের ঘনঘটায় স্বাভাবিকভাবেই আমনচাষিদের বুক কেঁপে কেঁপে উঠছে। এবারের ‘ডানা’র ঝাপটা সামলে অঘ্রাণে আমনের মাঠ থেকে সোনালি ফসল ঠিকমতো তুলতে পারবেন কিনা সেই দুঃশ্চিন্তায়  চাষিদের কার্যত রাতের ঘুম উধাও। সাধারণত বর্ষার জলের ওপর নির্ভর করেই দক্ষিণবঙ্গে আমন ধান চাষের রেওয়াজ। দুই বর্ধমানের পাশাপাশি বাঁকুড়া, হুগলি, হাওড়া প্রভৃতি জেলার বিস্তীর্ণ অংশের আমনের জমি বর্ষার জলেই কার্যত পুষ্ট হত। কোথাও কোথাও ক্যানাল কিংবা সেচখালের জল অল্পস্বল্প প্রয়োজন পড়ত। শুধু তাই নয়, সময়মতোই দক্ষিণবঙ্গে আমনের চাষ হত। এদিকে আমন ধানের জমি থেকে সোনালি ফসল ওঠার পরপরই সেই জমিতে চাষিরা কার্যত সময়মতো আলু, সরিষা সহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনের দিকে ব্যস্ত হয়ে পড়তেন। একদা প্রকৃতির সেই উদার মনোভাবে চাষির মুখে ছিল খুশির ঝিলিক। কিন্তু, বিশ্ব উষ্ণায়ণের কুপ্রভাব থেকে রেহাই পাচ্ছে না চাষ আবাদ। আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতের অস্বাভাবিক হেরফের ঘটেই চলেছে। ফলে অসময়ে অতিবৃষ্টিপাত তো; অনাবৃষ্টি কিংবা বৃষ্টিপাতের ব্যাপক ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। যার অস্বাভাবিকরম প্রভাব পড়ছে কৃষিক্ষেত্রে। ফলস্বরূপ এবারেও আমন ধান চাষের শুরুতেই বৃষ্টিপাতের যথেষ্টই ঘাটতি দেখা দিয়েছিল। ফলে অনেকেই সময়মতো জমি তৈরি করতে পারেননি। এই জেলায় সাড়ে পাঁচ লক্ষাধিক একর জমিতে আমনের চাষ হয়ে থাকে। কিন্তু, এবারে দফায় দফায় অতিবৃষ্টি সহ একাধিকবার বন্যা পরিস্থিতির কারণে শুরুতেই এই জেলার বিস্তীর্ণ অংশের আমন চাষ বড়সড় ধাক্কা খায়। এরই পাশাপাশি ধানের ফলনের মুখে রোগপোকার আক্রমণের আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন অনেকেই। চাষিদের একাংশ জানিয়েছেন এই মুহূর্তে ধানগাছে থোড় এসেছে ঠিকই তবে তাতে স্বাস্থ্যকর ফলন হওয়ার মতো কিছুক্ষেত্রে পুুষ্টির ঘাটতি দেখা দিয়েছে। যেকারণে  আমনে প্রত্যাশামতো ফলন না পাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন অনেকেই। সবমিলিয়ে এবার স্বস্তিতে নেই আমনচাষিরা। 

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version