Home Uncategorized অভাবের সাথে লড়াই করে সফল দীনমজুরের ছেলে চিকিৎসক হতে চায়

অভাবের সাথে লড়াই করে সফল দীনমজুরের ছেলে চিকিৎসক হতে চায়

0
Oplus_131072

সুভাষ চন্দ্র দাশ, ক্যানিং : বাবা রাজমিস্ত্রী জোগাড়ের কাজ করেন। মা গৃহবধু।অনিমেশ ও অতনু দুই ভাই। চার জনের পরিবারের নুন আনতে পান্তা ফুরায়।অভাব অনটন নিত্যদিনের সঙ্গী। এক বেলা না খেয়ে থাকলেও বন্ধ হয়নি ছেলের পড়াশোনা।জীবন যুদ্ধে অনেক লড়াইের সম্মূখীন হয়েও ছেলের লেখাপড়া চালিয়ে গিয়েছেন প্রত্যন্ত সুন্দরবনের বাসন্তী থানার অন্তর্গত চুনাখালি পঞ্চায়েতের বড়িয়া কলিকাখালি গ্রামের হালদার দম্পতি। গোসাবা ব্লকের শম্ভুনগর পঞ্চায়েতের ‘শম্ভুনগর হাইস্কুল(উঃমাঃ)থেকে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা মাধ্যমিকে ৬৩০ নম্বর পেয়ে পাশ করে সকলকেই অবাক করে দিয়েছে অনিমেশ হালদার। 

অনিমেশের মা রিঙ্কু দুই সন্তান কে নিয়ে সংসার সামলাতে ব্যস্ত ছিলেন।একসময় বড় ছেলের পড়াশোনা সামলাতে হিমশিম খেতে হয় হালদার দম্পতিকে।প্রাথমিকের গন্ডি টপকাতেই শম্ভুনগর হাইস্কুলে বড় ছেলেকে ভর্তি করেন।স্কুলে মেধাবী ছাত্র হিসাবে পরিচিত ছিল অনিমেশ।

অনিমেশ জানায় , ‘যখন ইচ্ছা হতো বই নিয়ে পড়াশোনা করতাম।এমন ভাবে দিন-রাত মিলিয়ে প্রায় ৪ ঘন্টা পড়াশোনা করতাম।স্কুলের শিক্ষকদের পরামর্শে বইয়ের মধ্যে ডুবে থাকার জন্য এমন সাফল্য এসেছে।বাংলায় ৯৪, ইংরেজিতে ৭২, অঙ্কে ৯৪, ভৌত বিজ্ঞানে ৯০, জীবন বিজ্ঞানে ৯৩, ইতিহাসে ৯০ ও ভূগোলে ৯৭ নম্বর পেয়ে পাশ করেছে অনিমেশ। এখন চিকিৎসক হতে চায় সে। ছেলের সাফল্যে চোখে জল বাবা বাসুদেবের। তিনি বলেন, ‘সারা জীবন কষ্ট করে এসেছি। কোনও কিছুতেই হাল ছাড়িনি। দুই সন্তানকেই পড়াশোনা করাবো। তবে অনিমেশ বরারবই মেধাবী ছিল। ওর উপর আমাদের আশাও ছিল।’ 

স্কুলে পড়াশোনা করার পাশাপাশি গ্রামেরই  গৃহশিক্ষক গয়ারাম হালদারের কাছে সমস্ত বিষয় পড়তো অনিমেশ।

শম্ভুনগর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক চিন্ময় পাত্র বলেন, ‘ওর এই সাফল্যে আমরাও সার্থক। ওর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি। প্রত্যন্ত গ্রামের ছাত্রের এই সাফল্যে গর্বিত স্কুলের শিক্ষকরাও।’

মাধ্যমিকের ফল দেখে খুশি অনিমেশ। সে বলে, ‘বাবা-মা আমার জন্য যা কষ্ট করেছে তা বলার মতো ভাষা নেই। স্কুলের প্রধান শিক্ষক চিন্ময় পাত্র ও অন্যান্য শিক্ষকরাও আমাকে সাহায্য করেছেন। আমি সুন্দরবনের সন্তান। এখানকার মানুষের দুঃখ যন্ত্রণা আমি বুঝি। চিকিৎসার জন্য ক্যানিং, কলকাতায় ছুটতে হয় প্রতিনিয়ত। তাই চিকিৎসক হয়ে সুন্দরবনের মানুষের সেবা করতে চাই।’

অন্যদিকে ছেলের সাফল্যে হাসি মুখ মলিন হয়েছে রিঙ্কু হালদারের।কি ভাবে ছেলেকে উচ্চতর শিক্ষায় শিক্ষিত করবেন সেই চিন্তায় ঘুব উবে গিয়েছে হালদার পরিবারের।অন্যদিকে গ্রামের ছেলে অনিমেশ গোসাবা ব্লকের মধ্যে সর্ব্বোচ্চ নম্বর পাওয়ায় গর্বিত বড়িয়া কলিকাখালি গ্রামের মানুষজন। 

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version