বরুণ মণ্ডল  :   বর্তমানে এই ঋতু পরিবর্তনের সময় কালে এইচএমপিভি(হিউম্যান মেট্যা-নিউমো ভাইরাস) নিয়ে কলকাতাবাসীর মধ্যে নানান প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।  এটি একটি আরএনআই ভাইরাস(রাইবো – নিউক্লিক অ্যাসিড), যেটি বায়ুবাহিত(ড্রপলেট ভাইরাস)।  এটির সংক্রমণ হাঁচি-কাশি থেকে শিশুদের হয়।  অধিকাংশ ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি হতে লাগে না।  এছাড়া বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের এবং যাঁদের ইমিউন স্ট্যাট কম বা কো-মর্বিডিটি যাঁদের বেশি তাঁদের হতে পারে।  উত্তর কলকাতার বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা.মীনাক্ষী গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘২০০১ সালে নেদারল্যান্ডে এই এইচএমপি ভাইরাস প্রথম আবিষ্কার হয়।  এটা কোভিডে’র মতো নতুন কোনও ভাইরাস নয়।’   গত ২৫ বছর ধরেই এই ভাইরাসকে চিকিৎসক মহল চেনেন বলে ডা. গঙ্গোপাধ্যায় জানান।  

এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে সর্দি ও কাশির সঙ্গে বমিভাব লক্ষ্য করা যায়।  ভিড়ের মধ্যে বা জানালা-দরজা বদ্ধ জায়গায় অতিরিক্ত সময় থাকলে এই ভাইরাসের সংক্রমণ আরও বেশি হতে পারে।

ডা. গঙ্গোপাধ্যায় জানান,  ‘যে কোনও ভাইরাল অ্যাটাকে অ্যান্টিবাইয়োটিক লাগে না।  জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল আর বমিভাবের জন্য ‘ডোমপেরিডোন’ ব্যবহার করলেই চলে।  তবে সঙ্গে অন্য সমস্যা হলে চিকিৎসক অ্যান্টিবাইয়োটিক দিলে, তবেই এর প্রয়োজন হতে পারে।’  ডা. গঙ্গোপাধ্যায় এটাও জানান, ‘অন্য সমস্যা না থাকলে যে কোনও ভাইরাল অ্যাটাক দু’সপ্তাহ সময় নেয় সেরে ওঠার জন্য।’

উত্তর কলকাতা ১২ নম্বর ওয়ার্ডের পৌরপ্রতিনিধি ডা. গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতা পৌরসংস্থার স্বাস্থ্য পরিষেবা দফতরের কাছে প্রস্তাব করেন কলকাতায় যতো প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্র আছে সেখানে এই এইচএমপি ভাইরাস বিষয়ে একটি করে সচেতনতা  ব্যানার দিলে শহরের স্বাস্থ্যকর্মীরা বা ভিজিটররা সচেতন হতে পারবে।

এছাড়াও তিনি জানান, যেহেতু এটি শূন্য থেকে ১২ বছরের বাচ্চাদের সর্দি-কাশি বেশি হয়, ফলে ‘চাইল্ড ডোজ প্যারাসিটামল’, অ্যান্টিভোমিটিং এবং ওআরএস(ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশন) যথেষ্ট সঙ্কুলান প্রয়োজন।  এই রোগে আক্রান্ত এলাকার শিশুরা বা বিদ্যালয়ের শিশুরা প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্রে এলে, তাঁদের আগে ছেড়ে দিলে সংক্রমণের প্রভাব কম হবে। হাটে-বাজারে-বিদ্যালয়ে কিছু প্রচারপত্র বিলি করা গেলে ভালো হয়।  

এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবের উত্তরে কলকাতা পৌরসংস্থার স্বাস্থ্য পরিষেবা দফতরের মেয়র পারিষদ উপমহানাগরিক অতীন ঘোষ বলেন,  কলকাতা পৌরসংস্থা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশানুযায়ী চলে।  রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর এইচএমপিভি সম্বন্ধে এখনও কোনও নির্দেশিকা জারি করেনি।  আসলে এই ভাইরাসের ব্যাপকতা এখনও সেই পর্যায়ে পৌঁছোয়নি।  তাতে অতিরিক্ত সচেতনতা প্রচার কর্মসূচি নাগরিক মনে ভীতির সঞ্চার হতে পারে।  এই ভাইরাস প্রতিরোধে চিকিৎসার সর্বপ্রকার ওষুধ পর্যাপ্ত পরিমাণে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মজুত আছে।  পরিস্থিতির ওপর সর্বক্ষণ নজর রাখা হচ্ছে।  এবং ব্যবস্থা নিতেও তৈরি আছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here