দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের অধীনে সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর জওয়ানরা আলাদা আলাদা ঘটনায় সীমান্তবর্তী এলাকায় অবৈধভাবে আন্তরাষ্ট্রীয় সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করায় ০২ জন বাংলাদেশী মহিলাকে গ্রেপ্তার করেছে। যার ভিতরে ০১ জন মহিলা ভারত থেকে বাংলাদেশে যাওয়ার চেষ্টা করছিলো অপর জন ভারতে থেকে আসার চেষ্টা করছিলো।
সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী কর্তৃক জারি করা একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, ১৫ই জুলাই, ২০২১ সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর গোয়েন্দা শাখায় তিন থেকে চারজন ব্যক্তির সীমান্ত অতিক্রম করার তথ্যের ভিত্তিতে ০৮ ব্যাটেলিয়ন বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের সীমা চৌকি সিলবেরিয়ার সীমান্ত চৌকিতে অবস্থিত জওয়ানদের সতর্ক করা হয় । ভোর আনুমানিক ৩ টে ৫০মিনিট নাগাদ জওয়ানরা সীমান্ত রাস্তার উভয় দিক থেকে কয়েকজন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে চলাচল করতে দেখে। জোয়ানরা তাদের থামতে বললে তারা ঘটনা স্থল থেকে পালাতে চেষ্টা করে। জওয়ানরা তাদের তাড়া করে একজন মহিলাকে হেফাজতে নিয়ে নেয় , তবে বাকিরা ঘন অন্ধকার এবং কলা বাগানের সুযোগ নিয়ে পালাতে সক্ষম হয়।গ্রেপ্তার হওয়া মহিলাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিলবেরিয়ায় সীমান্ত চৌকিতে আনা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মহিলাকে শারমিন শিকদার, বয়স ৩৫ বছর, দক্ষিণ মুকামুর কোলা, পিতা-তিয়াব শিকদার, জেলা-খুলনা, বাংলাদেশ বলে চিহ্নিত করা হয় । জিজ্ঞাসাবাদের সময়, মহিলা জানায় যে সে একজন বাংলাদেশী এবং তিন বছর আগে সে তার কাকাতো বোন শিবানির সাথে দেখা করতে ভারতে এসেছিল যে ১৪ বছর আগে গুজরাতের রাজকোটে ভারতীয় নাগরিক মোহাম্মদ ইউনূসের সাথে বিয়ে করে ওর সাথে থাকছিল ।সে আরও বলেছে যে তার কাকাতো বোনই তাকে দিলশাদ নামে এক ভারতীয়ের সাথে বিয়ে দিয়েছিল , যে উত্তর প্রদেশের প্রতাপ নগর জেলার ডান্ডুপুর গ্রামের বাসিন্দা। বিয়ের পরে সে গুজরাটের রাজকোটে, জিআইডিসি, ৩৬০০০৩ এ বসবাস শুরু করে এবং দিলশাদই তার ভারতীয় নকল পরিচয় তৈরি করেছে। সে আরও জানিয়েছে যে তার স্বামী বাংলাদেশে তার সাথে থাকতে পরাজি নয় এবং তাকে তালাক দিতে চায় । সে কারণেই সে ভারতীয় দালাল সুব্রত হালদারের সহায়তায় একা বাংলাদেশে ফিরে যাচ্ছিল এবং সে দালালকে ১২০০০/ – টাকাও দিয়েছে।
১৪ই জুলাই, ২০২১ , বেলা আনুমানিক১২ টা ১০ মিনিটের দিকে , সীমা চৌকি হাকিমপুর ১১২ ব্যাটেলিয়ন ,সেক্টর কলকাতার জওয়ানরা একজন বাংলাদেশী মহিলাকে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করার সময় গ্রেপ্তার করে । গ্রেপ্তার হওয়া মহিলার নাম সূর্য খাতুন, বয়স ২৫ বছর, স্বামী -আলামিন সরকার, গ্রাম- রাজাপুর, ডাকঘর-বেলফুলি, থানা- রূপসা, জেলা খুলনা, বাংলাদেশ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধরা পড়া এই বাংলাদেশি মহিলা জানায় যে সে তিন বছর আগে সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধভাবে স্বামীর সাথে ভারতে এসেছিলো এবং বারাসাতে ওসমান গাজীর (কোকাপুর, ডাকঘর-দত্তপুকুর , থানা দত্তপুকুর , বারাসত) বাড়িতে কাজ করতো । তবে লকডাউনের কারণে সে ০৩ মাস আগে বাংলাদেশে ফিরে গিয়েছিলো তবে তার স্বামী ভারতে ছিল । সে আরও বলেছে যে তার ত্বকে সংক্রমণ হাওয়ায় সে ভারতে এসে চিকিৎসা করানোর কথা ভাবে এবং একজন বাংলাদেশীদালালের সাহায্যে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে আসে। এজন্য সে দালালকে ১৫ হাজার বাংলাদেশি টাকা দিয়েছিলো । তবে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স তাকে ধরে ফেলে ।
গ্রেফতারকৃত ০২ জন মহিলাকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সম্মন্ধিত থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিএসএফ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশ রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। যার কারণে অনুপ্রবেশকারী এবং দালালদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামনে আসছে । যার ভিত্তিতে দেশের অভ্যন্তরীণ এলাকায় অবৈধভাবে আগত ব্যক্তিদের এবং দালালদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণে সহায়তা করছে।