Home General মাটি আর ভগবান ভরসা

মাটি আর ভগবান ভরসা

0

নিজস্ব প্রতিনিধি: ফের আরও এক কোটাল আতঙ্কের মুখোমুখি নদীতীরবর্তী পশ্চিমবঙ্গ বিশেষ করে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা। গত বিপর্যয়ে যশ সাইক্লোন সেভাবে পশ্চিমবঙ্গে ছোবল মারতে না পারলেও বৈশাখী পূর্ণিমার জলোচ্ছ্বাস জনজীবন বিপর্যস্ত করে দিয়েছে উপকূলবর্তী মানুষের। ঠাণ্ডা ঘরের টেবিলে বসে নানা পশ্চিমকল্পনা হলেও এখনও সে ক্ষত দগদগে ঘা হয়ে রয়ে গিয়েছে। ধুয়ে যাওয়া বাঁধে কিছু মাটির মলমের প্রলেপ পড়লেও কার্যকরী কিছু এখনও হয়নি। আগামী কোটাল যদি সত্যিই সর্বনাশ নিয়ে আসে তা আটকাতে এই মলম আদৌ কাজ দেবে কিনা সেই সংশয়ে ভুগতে শুরু করেছেন দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলির মতো উপকূলবর্তী জেলার মানুষরা। তাদের কাছে এখন ওই মাটি আর ভগবান প্রধান ভরসা। তাদের লড়াই আর আশীর্বাদই বাঁচাতে পারে এই আসন্ন বিপদে।
ভয় পেয়েছে সরকারও। বাঁধের উপর ভরসা নেই তাদেরও। তাই ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানোর কাজ। বাঁধের ধারে ঘুরে ঘুরে মাইকে সতর্ক করা হচ্ছে নদীর ধারে বাসকরা মানুষক। ত্রিপল, শুকনো খাবার মজুত করার কাজও চলছে বিভিন্ন ব্লকে। বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন সিভিল ডিফেন্সের বাহিনী। প্রস্তুত করা হয়েছে জাতীয় ও পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকেও। এসব তত্পরতা দেখে মানুষের মনেও দানা বেঁধেছে আশঙ্কা। দুয়ারে ত্রাণের আবেদন জমা নেওয়ারে পর এখন চলছে তার নিরীক্ষণ। ৩০ জুন থেকে ত্রাণের টাকা পাওয়ার কথা বলেছে সরকার। এর মধ্যে যদি ফের ধাক্কা দেয় কোটাল তাহলে এই ত্রাণও ফেরাতে পারবে না স্বাভাবিক জীবন।
আসলে বিপর্যয়, বাঁধ আর সেচ দফতরকে হাড়ে হাড়ে চেনে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ। আয়লা ঝড়ের পর চোখ আরও খুলে গিয়েছে তাদের। প্রতিবার ঝড়বাদলের পরে নানা প্রতিশ্রুতি মিললেও জীবনযন্ত্রণায় কোনও বদল ঘটে না নদীর পাড়ের বাসিন্দাদের। প্রতিবছর তাই জীবনের অঙ্গ হয়ে উঠেছে নদীর জল। সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা ঘরে দেখে যান, কাজের বরাত দেওয়া হয় ঠিকাদারদের, বিলও পাশ হয়ে যায় নির্বিবাদে কিন্তু বাঁধ রয়ে যায় সেই তিমিরেই। আয়লা তো দেখিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের বরাদ্দও তাদের জীবন ফেরাতে পারেনি। জমি অধিগ্রহণের ব্যর্থতায় ফেরত গিয়েছে টাকা। আবারও স্বপ্ন দেখানো হচ্ছে কংক্রিট বাঁধের। সেচ দফতরের কর্তারা অবশ্য বলছেন দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের পরিকল্পনা চলছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে নজরদারি করছেন। শীঘ্রই স্থায়ী সমাধানের কাজ শুরু হবে। সেচমন্ত্রীও বলছেন বাঁধ সারাবার ও খাল সংস্কারের কথা। শেষ পর্যন্ত সেচ দফতরের দীর্ঘসূত্রীতার দশা কাটলে তবে রাহু মুক্তি ঘটবে উপকূলবর্তী জেলা বাসীর। অবশ্য সবই ভবিষ্যতের গর্ভে। বাম্প দেখা যাচ্ছে বটে। কিন্তু আসলে কি প্রসব হয় সেটাই দেখার।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version