উত্তর ২৪ পরগণা, ১০ই জানুয়ারী ২০২৪, আইসিপি পেট্রাপোল চোরাচালানের দৃষ্টিকোণ থেকে সবচেয়ে সংবেদনশীল এলাকাগুলির মধ্যে একটি, যেখানে চোরাকারবারীরা ক্রমাগত নতুন কৌশল নিয়ে চোরাচালান চালানোর চেষ্টা করছে কিন্তু বিএসএফ ক্রমাগত সতর্কতা এবং সচেতনতা সাথে চোরাচালানকারীদের পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দিচ্ছে। একই ধারাবাহিকতায়, ৯ই জানুয়ারী২০২৪-এ বিএসএফ দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের অধীনে ১৪৫ ব্যাটালিয়নের আই.সি.পি পেট্রাপোলের সতর্ক জওয়ানরা ০৫ জন মহিলা চোরাকারবারীকে ১০ টি তামা-কোটেড সোনার চুড়িসহ হাতেনাতে ধরে। চোরাকারবারীরা এই চুড়ি আইসিপি পেট্রাপোল হয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচারের চেষ্টা করছিল। জব্দকৃত সোনার চুড়ির ওজন ২৯৯.৮২ গ্রাম এবং আনুমানিক মূল্য ১৮,৮১,৩৭১/- টাকা।
তথ্য অনুসারে, বিএসএফ ১৪৫ ব্যাটালিয়নের আইসিপি পেট্রাপোলের জওয়ান দৈনন্দিন কর্তব্য চলাকালীন কিছু মহিলা পাসপোর্ট যাত্রীর সন্দেহজনক গতিবিধি লক্ষ্য করেন, তারপরে কর্তব্যরত মহিলা বিএসএফ কর্মীরা তাদের ডিউটিতে থাকা অন্যান্য সহকর্মীদের সাথে তাদের আলাদা করে আধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্য (ধাতু আবিষ্কারক)তল্লাশি চালায়। এই সময় তাদের কাছ থেকে ১০ টি সোনার চুড়ি উদ্ধার করা হয়, এই চুড়িগুলি জওয়ানদের নজর এড়াতে তামার গভীর আবরণ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল। এসব নারী চোরাকারবারীরা কোনো বৈধ কাগজপত্র ও শুল্ক পত্র ছাড়াই এসব চুড়ি বাংলাদেশ থেকে ভারতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। বিএসএফ জওয়ানরা সোনার চুড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ মহিলাকে হেফাজতে নিয়েছে।
গ্রেফতারকৃত নারী পাচারকারীরা হলেন- আশিমা মুহুরি (বয়স-২১ বছর), সবিতা দাস (বয়স ২৪ বছর), আশালতা দাস (বয়স ২৫ বছর), নমিতা সাহা (বয়স ৩৩ বছর) এবং সর্বাণী সেন (বয়স ৩২ বছর) নদীয়া জেলা এবং উত্তর ২৪ পরগণা, পশ্চিমবঙ্গ।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা পশ্চিমবঙ্গের (ভারত) বাসিন্দা বলে জানায়। তারা আরও জানান, তারা সবাই ভারত থেকে বাংলাদেশে চোরাচালান পণ্য পরিবহনে বাহক হিসেবে কাজ করছেন। ২০২৪ সালের 8 জানুয়ারী, তারা সবাই কোলকাতা বিমানবন্দর থেকে চোরাচালান করা পণ্য নিয়ে ঢাকায় যায় এবং সেখান থেকে আই.সি.পি পেট্রাপোল থেকে ভারতে ফেরার পথে, ঢাকায় ফেরার সময় দীপক সাহা নামে এক ব্যক্তি আমাদের প্রত্যেককে দুটি করে সোনার চুড়ি দেয়। যা সোদেপুর (কলকাতা) ভিত্তিক কিছু অজানা ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর করা কথা হয়েছিল, যার জন্য তারা প্রতি চুড়ি প্রতি ১০০০/- টাকা পেতো। কিন্তু আইসিপি পেট্রাপোল পার হওয়ার সময় সজাগ বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের জোয়ানরা সোনার চুড়ি সহ তাদের ধরে ফেলে।
আটক চোরাকারবারী ও জব্দকৃত সোনার চুড়ি পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার জন্য পেট্রাপোল কাস্টমস অফিসে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সৈনিকদের এই কৃতিত্বে দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের জনসংযোগ কর্মকর্তা শ্রী এ.কে. আর্য, ডি.আই.জি আনন্দ প্রকাশ করেছেন। তিনি আরও বলেন, কুখ্যাত চোরাকারবারিরা গরিব ও নিরীহ মানুষকে সামান্য অর্থের প্রলোভন দিয়ে ফাঁদে ফেলে। কুখ্যাত পাচারকারী চক্র সরাসরি চোরাচালানের মতো অপরাধে জড়িত নয়, তাই তারা দরিদ্র মানুষকে টার্গেট করে। তিনি সীমান্তে বসবাসকারী লোকদের কাছে আবেদন করেছেন যে তারা যদি সোনা চোরাচালান সংক্রান্ত কোনও তথ্য পান তবে তারা বিএসএফ-এর সীমা সাথী হেল্পলাইন নম্বর ১৪৪১৯-এ এই তথ্য দিতে পারেন। এছাড়া দক্ষিণবঙ্গ সীমান্ত আরও একটি নম্বর ৯৯০৩৪৭২২২৭ জারি করেছে। হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ বা স্বর্ণ চোরাচালান সম্পর্কিত ভয়েস বার্তাও পাঠানো যেতে পারে। সঠিক তথ্য প্রদানকারী ব্যক্তিকে একটি উপযুক্ত পুরস্কারের পরিমাণ দেওয়া হবে এবং তার পরিচয় গোপন রাখা হবে।