দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের অধীনে সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর জওয়ানরা জেলা নদিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় দুইজন বাংলাদেশি পাচারকারীকে গাঁজা এবং ফেনসিডিলসহ গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার হওয়া চোরাচালানীরা সীমান্ত পার করা সব ধরণের অপরাধে জড়িত বলে জানা গেছে।
সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর গোয়েন্দা শাখা এবং অ্যান্টি হিউম্যান ট্র্যাফিকিং ইউনিট দ্বারা মিলিত তথ্যের ভিত্তিতে ১৬ ই জুলাই, ২০২১, 0৮ তম ব্যাটেলিয়ন সীমা চৌকি , মহেন্দ্রর জওয়ানরা একটি বিশেষ অভিযান চালিয়ে দু’জন বাংলাদেশি দুষ্কৃতী , পাচারকারীকে দুই কেজি গাঁজা, ২২ বোতল ফেনসিডিল এবং ৪৮ বোতল দেশি মদ সহ গ্রেপ্তার করে।
তাদের পরিচয় নিম্নরূপ:-
i ) ইস্রাফিল হুসেন, বয়স ২৬ বছর, পিতা – জুনুরউদ্দিন, গ্রাম -বেনীপুর, থানা – জীবননগর, জেলা -চুয়াডাঙ্গা , বাংলাদেশ।
ii ) আবদুল রহিম, বয়স ৩২ বছর, পিতা- স্বৰ্গীয় উসমান গণি, গ্রাম- পিপুল বেরিয়া, থানা – মহেশপুর, জেলা- ঝিনাইদহ , বাংলাদেশ।
তাদের আরও তদন্তের জন্য সীমান্ত চৌকি মহেন্দ্রতে নিয়ে আশা হয় ।
তদন্তে ইসরাফিল হুসেন প্রকাশ করেছে যে সে সব ধরণের সীমান্ত অপরাধ এবং মূলত মানব পাচারে জড়িত। সে আরও বলেছে যে সে ভারতীয় মানব পাচারকারী সাগর বিশ্বাস (গ্রাম সুকান্তোপল্লি, তারক নগর, জেলা নদিয়া থেকে) এবং বাংলাদেশী মানব পাচারকারী নয়নে, যশোরের বাসিন্দার সাথে কাজ করে । সে ঢাকা থেকে মহিলাদের নিয়ে এসে ভারতীয় মানব পাচারকারী সাগর বিশ্বাসের হাতে তুলে দিত । ইসরাফিল আরও প্রকাশ করেছে যে, ভারতীয় পাচারকারী অভিজিৎ ঘোষ, রঞ্জিত, যারা নদীয়া জেলার খান্টুরা ও ওয়াসিম গ্রাম- পাটখালি এবং বাংলাদেশি পাচারকারী আলামিন হুসেন আলী, রিয়াজ, আবদুল রহিম, রতন বিভিন্ন ধরণের নিষিদ্ধ পণ্য কিনে পাচারকরার জন্য ভারতীয় গ্রাম ভজনঘাটের কাছে কলা বাগানে সংগ্রহ করে। সমস্ত ছোট চোরাচালানকারী সেখান থেকে পণ্য তুলে সীমান্ত অতিক্রম করে। গ্রেফতারকৃত চোরাকারবারী সেখান থেকে চোরাচালানের জন্য সামগ্রী নিয়েছিল এবং তার এক সহযোগীর সহায়তায় সেগুলো বাংলাদেশের বেনীপুরে নিয়ে যাচ্ছিল। অনেক গোয়েন্দা সংস্থার তালিকায় এই ইস্রাফিল হুসেনের নাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ধরা না পড়লে অনেক নারী পাচার হয়ে যেত
ইস্রাফিল হুসেন আরও বলেছে যে সে ছয়জন নারীকে বাংলাদেশ থেকে নিয়ে এসে দালাল সাগর বিশ্বাসের কাছে পাঠাচ্ছিল, কিন্তু বাংলাদেশে লকডাউনের কারণে সে মহিলাদের পাঠাতে পারেনি এবং সে পাচারের জন্য সাগর বিশ্বাসের কাছ থেকে 90 হাজার টাকাও নিয়েছে। আটক হওয়া দ্বিতীয় চোরাকারবারি আবদুল রহিম জানায় যে সে সীমান্তে সব ধরণের পাচারের সাথে জড়িত। সে আরও বলেছে যে ভারতীয় পাচারকারী হাতিম মন্ডল এবং বাংলাদেশি চোরাচালানকারী আলামীন, হুসেন আলী, সরিফুল, ইসরাফিল, তাকে চোরাচালান সামগ্রী সরবরাহ করে এবং আন্তঃসীমান্ত চোরাচালানে তাকে সহায়তা করে এবং হাতিম মণ্ডল হলো মূল চোরাচালানকারী। সে আরও জানায় যে আজ সে পাটখালি থানা কৃষ্ণগঞ্জের বাসিন্দা জামাল ও ওয়াসিমের কাছ থেকে পাচারের জন্য সামগ্রী নিয়ে এসেছে।
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের সাথে বাজেয়াপ্ত মালামাল সহ আরও আইনী কার্যক্রমের জন্য থানা হানসখালীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
কৃষ্ণনগর সেক্টরের ডিআইজি শ্রী আমরিশ কুমার আর্য তাঁর জওয়ানদের এই কৃতিত্বের জন্য আনন্দ প্রকাশ করে জানান যে সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নিষিদ্ধ পণ্য ও মানব পাচার রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। যার কারণে চোরাচালানকারী ও তাদের সহযোগীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ হচ্ছে। যার ভিত্তিতে দেশের অভ্যন্তরীণ অঞ্চলে চলাচলকারী পাচারকারী এবং দালালদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে সহায়তা মিলছে । তিনি পরিষ্কার বলেন যে তিনি তার এলাকায় কোনও ধরণের পাচার হতে দেবেন না।