উৎপল সাহা: গত ৩-৪ জুন পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরি ১, খেজুরি ২, রামনগর, মন্দারমনি, কাঁথি-১ ও কাঁথি-২-এর যশ পরবর্তী বিধ্বস্ত অঞ্চল পরিদর্শন করেন মাননীয় কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের সঙ্গে তিনি বিস্তারিতভাবে কথা বলেন। জমিতে ঢুকে যাওয়া নোনা জল বের করার জন্য বিভিন্ন অঞ্চলে প্রয়োজন মতো পাম্প বসানোর জন্য তার আধিকারিকদের তিনি নির্দেশ দেন। তিনি জানান যে, মমতা ব্যানার্জীর নির্দেশানুযায়ী এই পাম্প বাসনোর জন্য প্রায় ১ কোটি টাকা বরাদ করা হয়েছে। চাষিদের কথা চিন্তা করে দফতর এবার পাম্প সংক্রান্ত যাবতীয় খরচের সমস্তটাই নিজে বহন করবে বলে তিনি জানান। প্রসঙ্গত, উল্লেখ্য পূর্বে দফতরের তরফ থেকে পাম্প বসিয়ে দেওয়া হলেও আনুষঙ্গিক কিছু খরচ চাষিদেরকেই বহন করতে হতো। এছাড়াও তিনি আরও জানান, এখনও পর্যন্ত পাওয়া হিসাব অনুযায়ী প্রায় ১৬ হাজার ৫৬৩ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এই হিসাব আরও বাড়তে পারে। কারণ কিছু কিছু জেলার হিসাব এখন পুরোপুরি হাতে পাওয়া যায় নি। তিনি কৃষক এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের কাছে সরকারের তরফ থেকে সাহায্য পাওয়ারে জন্য ৩ তারিখ থেকে ১৮ তারিখ পর্যন্ত যে আবেদনের সময়সীমা দেওয়া হয়েছে সেই সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছে আবেদন করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি তার আধিকারিকদের এই ত্রাণ বন্টনের জন্য মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি অনুসরণ করার কথাও বলেছেন, তিনি বলেন কোনও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে না বলে দেওয়া খুব সহজ কিন্তু কি উপায় অবলম্বন করলে একজন প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ সাহায্য পেতে পারেন সে ব্যাপার আধিকারিকদের মানবিক হওয়ার কথা বলেছেন। সর্বস্ব হারা চাষিরা যাতে অবিলম্বে সরকারী সাহায্য পেতে পারেন, সেটা দেখা রাজ্য সরকারের একমাত্র কর্তব্য বলে তিনি আধিকারিকদের কড়া নির্দেশ দেন।
বার বার প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ও বাঁধ সমস্যার কারণে গ্রামের পর গ্রাম চাষযোগ্য জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তার মাসুল গুনতে হয় চাষিদের এবং চাষে ক্ষতি হলে সেই ধাক্কা গিয়ে লাগে দৈনন্দিন বাজারে। একবার নোনা জল ঢুকে গেলে বহু বছর লেগে যায় সেই ধান জমিকে আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে। আর তার সাথে সাথে প্রভাব পড়ে অর্থনীতিতে। মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বিভিন্ন অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিজ্ঞানীরা ৬ ধরনের বীজধান আবিষ্কার করেছেন যেগুলি নোনাজলেও চাষ করা সম্ভব হবে। এই বীজধান চাষিদের মধ্যে বন্টনের জন্যও আধিকারিকদের নির্দেশ দেন তিনি। চাষিরা এই আবিষ্কারে আশার আলো দেখবে এবং কৃষিক্ষেত্রে এক অন্য বিপ্লব আনবে বলে আশাবাদী কৃষিমন্ত্রী যা সব দিক থেকেই সুফল এনে দেবে কৃষিক্ষেত্রে।