উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়নগর: তীব্র তাপদহে ভুগছে বাংলা।আর এই সময়ে গ্রীষ্মকালীন ফল যেমন লিচু, আম সহ একাধিক ফলেতে অত্যাধিক গরমে ফেঁটে যাচ্ছে, কালো হয়ে যাচ্ছে, পচে নস্ট হয়ে যাচ্ছে। এই সময়ে ফল ছিদ্রকারী পোকার উপদ্রব অনেক বেড়ে গেছে।এবছর আমের ফলন খুব বেশি না হলেও লিচুর ভালো ফলন হওয়ায় খুশিতে ছিলো চাষিরা।কিন্তু পোকার আক্রমণে এখন তাঁরা দিশেহারা।পেয়ারার পাশাপাশি লিচুর জন্যে
আমাদের রাজ্যের মধ্যে বারুইপুর অঞ্চলটি বেশ বিখ্যাত। এখানে প্রায় ৭০০ হেক্টর লিচুর বাগান রয়েছে। মে মাসের মাঝামাঝি থেকে শেষের দিকে বাজারে প্রথম যে লিচু আমরা পেয়ে থাকি তা এই অঞ্চলেরই বাগানের লিচু।এবছর তীব্র তাপদহে এই সময় লিচুতে ফল ছিদ্রকারী পোকার (কনোপোমর্ফা সাইনেন্সিস) আক্রমণে চাষিরা বেশ ক্ষতিগ্রস্ত। এ ব্যাপারে বারুইপুরের কয়কজন লিচু চাষি বলেন,এবছর লিচুর ভালো ফলন দেখে ভাবলাম এবারে আমাদের উপার্জন ভালো হবে কিন্তু পোকা সব শেষ করে দিয়ে গেল।এব্যাপারে নিমপীঠ শ্রী রামকৃষ্ণ আশ্রম কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের শস্য সুরক্ষা বিদ ড:প্রবীর কুমার গরাই বলেন, এই পোকা মথ পাতার তলদেশে, ফুলের বৃতির নিচে অথবা ফলের উপর ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে নির্গত লার্ভা ফল ও বৃন্তের সংযোগস্থলে ছিদ্র করে ফলের মধ্যে প্রবেশ করে ও ফলের গোড়ার দিকে শাঁস ও বীজ খেতে থাকে। ছোট অবস্থায় আক্রমণ হলে আক্রান্ত ফলগুলি আর বড় হয়না এবং ঝরে পড়ে। পরিণত ফলের খোসা ছাড়ালে ফলের গোড়ার দিকে বীজের মধ্যে সাদা লার্ভা ও তার মল দেখা যায়।আর এতে আক্রান্ত ফলের বাজার দর কমে যায়। তবে এক্ষেত্রে চাষিদের করনীয় হলো লিচু বাগানে ঝরে পড়া ফল ও পাতা সরিয়ে ফেলতে হবে।প্রথমে নিম জাতীয়কীটনাশক যেমন অ্যাজাডিরাক্টিন ১০০০০ পিপিএম @ ২ মিলি প্রতি লিটার জলে ও পরবর্তীতে অতিরিক্ত আক্রমণ হলে এমামেক্টিনবেঞ্জয়েট ৫ এসজি @ ৫ গ্রাম প্রতি ১০ লিটার জলে অথবা নোভালিউরন @ ৭.৫ মিলি প্রতি ১০ লিটার জলে গুলে স্প্রে করতে হবে। নিমপীঠ শ্রী রামকৃষ্ণ আশ্রম কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের উদ্যান পালন বিদ ড: অরিত্র সরকার বলেন,এই প্রখর তাপদহের সময়ে লিচু গাছের পরিচর্যার সময় হলো বিকাল বেলা।রৌদ্রের সময় কোনো ভাবে গাছে জল দেওয়া ও কীটনাশক স্প্রে করা উচিত হবে না।