বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা:স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্য
দিয়ে ইতিহাস বিকৃতির যে কালো অধ্যায় সূচিত হয়েছে তার ফলেই মুক্তিযুদ্ধের
পরবর্তী প্রজন্মে ভারতবিদ্বেষ সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন
বীরমুক্তিযোদ্ধারা।
মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকার বাংলামটরে ‘স্বীকৃতির ৫১তম বর্ষে পুনর্মূল্যায়ন:
ভারতের রক্তঋণ ও নবপ্রজন্মের দায়’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে
তারা এ মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ-ভারত ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিষদ আয়োজিত
পরিষদের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন খেতাবপ্রাপ্ত,
শহীদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ডের মহাসচিব ও
মুক্তিযুদ্ধের বীরপ্রতীক আনোয়ার হোসেন পাহাড়ী।
অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে ভারতের যে রক্তঋণ
রয়েছে বাংলাদেশ তা কোনদিনই শোধ করতে পারবে না। কিন্তু নতুন প্রজন্মের
প্রকৃত ইতিহাস জানার মধ্য দিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সুযোগ রয়েছে। আমাদের
দুর্ভাগ্য স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যথেষ্ট কৃতজ্ঞতা প্রদর্শন করতে পারিনি।
উপরন্তু মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে ক্ষমতার বাইরে রাখতে বলা হয়েছে,
তারা ক্ষমতায় এলে মসজিদে উলুধ্বনি হবে, দেশ ভারতের অংশ হয়ে যাবে। যদিও
তার কিছুই হয়নি।’
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি খেতাবপ্রাপ্ত, শহীদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা
কেন্দ্রীয় কমান্ডের চেয়ারম্যান মাহমুদ পারভেজ জুয়েল বলেন, ‘বাংলাদেশের
মতো ভারতের নতুন প্রজন্মকেও মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল অতীতকে জানতে হবে।
দুই দেশের প্রজন্ম যদি একাত্তরের মতো একাত্ম হতে পারে তবেই আগামী দিনে
বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী অটুট থাকবে।’
অনুষ্ঠানের সভাপতি এবং বাংলাদেশ-ভারত ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিষদের সহ-সভাপতি
অধ্যাপক ড. উত্তম কুমার বড়ুয়া বলেন, ‘আনুষ্ঠানিকভাবে ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ এ
ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিলেও প্রকৃতঅর্থে আরও বহু আগেই তারা আমাদের
স্বীকৃতি দিয়ে দিয়েছিলেন। এক কোটির বেশি শরণার্থীকে দীর্ঘসময় আশ্রয় দিয়ে,
অস্ত্র-গোলাবারুদ দিয়ে; এমনকি ভারতীয় সেনাদের প্রত্যক্ষ যুদ্ধে পাঠিয়ে
তারা যেভাবে বাংলাদেশের বিজয়কে ত্বরান্বিত করেছিল তার তুলনা বিশ্বে বিরল।
বিশ্বশক্তির সঙ্গে সেই সময়ের ভারত সরকারকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য যে
অসম লড়াই করতে হয়েছে তা অতুলনীয়।’
বাংলাদেশ ভারত ইতিহাস ও ঐীতহ্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলামের
সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-মুক্তিযোদ্ধা আবদুল
কাদির, ইতিহাস গবেষক রাইহান নাসরিন, আওয়ামীলীগের শ্রম ও কর্মসংস্থান
বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য আবু সেলিম, আয়োজক সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক আবৃত্তি
শিল্পী রুপশ্রী চক্রবর্তী, গণমাধ্যম বিষয়ক সম্পাদক সাংবাদিক শাহনাজ
পারভীন এলিস, সদস্য টিটু প্রিভেল পাল, মো. আলমগীর, নূরুল ইসলাম, শাকিল
আহমেদসহ অন্যরা। অনুষ্ঠানের আয়োজন সহযোগি ছিল বিশেষায়িত নিউজ পোর্টাল
বহুমাত্রিক.কম ও ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর নেতাজী সুভাষ আইডিওলজি
(আইসিএনএসআই)।