১৬ বছর পর ফিরতে চলেছে ‘আয়লা’ স্মৃতি, তান্ডব চালাতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’

0
147

সুভাষ চন্দ্র দাশ, সুন্দরবন:  আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসে আবারও একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়তে চলেছে সমগ্র সুন্দরবনবাসী। ইতিমধ্যে প্রশাসনের তরফে সতর্কবার্তা জারী করা হয়েছে জেলা জুড়ে। দীর্ঘ ১৬ বছর পর আবারও বিগত ২০০৯ সালের ২৫ মে আয়লা’র স্মৃতি ফিরতে চলেছে। উল্লেখ্য আম্ফান, ইয়াস ও বিধ্বংসী আয়লার স্মৃতি উস্কে ২৬ মে রবিবার সুন্দরবনে আঘাত হানতে চলেছে আরো এক বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’! ২০২০ সালের ২০ মে আম্ফান ও ২০২১ সালের ২৬ মে ইয়াস বিধ্বংসী রূপ নিয়ে আছড়ে পড়েছিল দুই ২৪ পরগনার অন্তর্গত সুন্দরবন উপকূলবর্তী এলাকায়। ২০০৯ সালে প্রায় ২৫ মে পশ্চিমবঙ্গ সহ বাংলাদেশ উপকূলেও তীব্র গতিতে আছড়ে পড়েছিল ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় ‘আয়লা’। বছরে বছরে হওয়া এই ঘূর্ণিঝড় গুলির ধাক্কায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি থেকে শুরু করে প্রাণহানির মতো ঘটনাও ঘটেছিল সমগ্র সুন্দরবন সহ এরাজ্যে। ঘটছিল নদীবাঁধ ভেঙে জলোচ্ছ্বাস। নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছিল অসংখ্য বসতবাড়ি,কৃষিজমি।বর্তমানে সুন্দরবনের নদীবাঁধের অবস্থা অত্যন্ত সংকীর্ণ। ‘রেমাল’ আসার খবরে সেই আতঙ্ক যেন আবারও আতঙ্ক গ্রাস করে ফিরে আসছে উপকূলবাসীদের মনে!রেমাল তান্ডব চালালে সুন্দরবনের নদীবাঁধ ভেঙে লবনাক্ত জল লোকালয়ে ঢুকে প্লাবিত হতে পারে। আবারও বড়সড় ক্ষতির আশাঙ্কা। রেমাল এর পূর্বভাস জানতে পেরে ইতিমধ্যে ঘুম উবে গিয়েছে সমগ্র সুন্দরবনবাসীদের।

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর সুত্রের খবর রবিবার সন্ধ্যা নাগাদ পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূলের সুন্দরবন  কিংবা সংলগ্ন এলাকায় ঘূর্ণিঝড় রেমাল আছড়ে পড়ার সম্ভাবনাই বেশি। তবে ঠিক কোন জায়গা দিয়ে এবং কখন ঘূর্ণিঝড় উপকূল অতিক্রম করবে, তা জানানো হয়নি। তবে ‘রেমাল’ এর প্রভাবে রবি ও সোমবার কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় প্রবল বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার জেরে দুর্যোগ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। রবিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার কোথাও কোথাও দমকা হাওয়ার সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটারে পৌঁছনোর সম্ভাবনা আছে। উত্তর ২৪ পরগনাতে ঘণ্টায় ৮০-৯০ কিলোমিটার, কলকাতা ও পূর্ব মেদিনীপুরে ঘণ্টায় ৭০-৮০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে।

রেমাল যে সুন্দরবনের উপর তান্ডব চালাতে পারে সে কারণে ইতিমধ্যে প্রশাসনের তরফে সুন্দরবন উপকুলীয় এলাকায় মাইকিং করে সচেতনতার বার্তা দেওয়া হচ্ছে।মৎস্যজীবিদের কে গভীর সমুদ্র থেকে দ্রুত ফিরে আসতে বলা হয়েছে। প্রশাসনের তরফে ঘুর্ণিঝড় রেমাল নিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে প্রয়োজনীয় ওষুধ, শুকনো খাবার, পানীয়জল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা টীমকে। ঘূর্ণিঝড় রেমাল প্রসঙ্গে জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা জানিয়েছেন, প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য সমস্ত দপ্তরের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সমস্ত রকম ভাবে প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here