নিজস্ব প্রতিনিধি: কথায় বলে মাছে ভাতে বাঙালি। মাছ বাঙালি এবং পশ্চিমবঙ্গের সাথে ওতপ্রুত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে। পশু এবং মৎস্য চাষ নিয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মৎস্য দপ্তরের সহযোগিতায় এই অনুষ্ঠানে এইসব চাষের অগ্রগতি এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়। এছাড়াও তুলে ধরা হয় চাষের মাধ্যমে ব্যবসায়িক বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানের পরিকল্পনা। প্রথমেই এমসিসিআইয়ের চেয়ারম্যান নমিত বাজোরিয়া স্বাগত ভাষণে বলেন পশু ও মৎস্য চাষের মাধ্যমে গ্রাম্য অর্থনীতি এবং শিল্প অগ্রগতি পেয়েছে, ভারত এই মুহূর্তে মাছ উৎপাদনে তৃতীয় নম্বরে আছে।এমসিসিআইয়ের মৎস্য দপ্তরের চেয়ারম্যান অমিত কুমার সারাওগি বলেন ৭ বিলিয়ন মাছ রপ্তানি করে ভারত। লেক পুকুর মিলিয়ে প্রায় ৪১ মিলিয়ন হেক্টর জায়গায় মৎস্য চাষ হয় পশ্চিমবঙ্গে। যা ভারতের মধ্যে সর্বপ্রথম ভারতের প্রায় ৭০ শতাংশই চাষ হয় পশ্চিমবঙ্গে। এগ্রো লিমিটেডের প্রধান মির নামরেজ আলী বলেন একদম অল্প জায়গা থেকে শুরু করে আজ তারা মাছ চাষে অগ্রণী ভূমিকা নিচ্ছে এবং বিদেশে রপ্তানিও করছে। বছর শেষে আনুমানিক ৭০০ কোটি টাকার ব্যবসা হয়। তিনি বণিক সভার সদস্যদেরও কেউ এ বিষয়ে ভেবে দেখবার জন্য বলেন। তিনি বলেন এই মাছ চাষের মাধ্যমে 3000 লোকের কর্মসংস্থান তিনি প্রদান করছেন। পশ্চিমবঙ্গ পোল্ট্রি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মদনমোহন মাইতি উল্লেখ করেন পশ্চিমবঙ্গ বদলাচ্ছে ডিম উৎপাদনে চতুর্থ স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। দশ বছর আগে .৬ শতাংশ উৎপাদন হত কিন্তু এখন ৯.৯৪ উৎপাদন করছে। বয়লার মুরগি উৎপাদনে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। যা খুব শীঘ্রই প্রথম স্থান অর্জন করবে। তিনি বলেন পোল্ট্রি ফার্মের উন্নত করার প্রচেষ্টা চলছে খুব শীঘ্রই পরিবেশ বান্ধব পোল্ট্রি গড়ে তুলতে পারবে পশ্চিমবঙ্গ সে বিষয়ে তিনি বণিক সভার সদস্যদের কেউ এগিয়ে আসতে বলেন। তিনি সংযোগ করেন ইতিমধ্যেই পোল্ট্রির মুরগির বজ্র পদার্থ দিয়ে তৈরি হচ্ছে গ্যাস এবং সেখান থেকে তৈরি করা যাবে বিদ্যুৎ তাই এই বিভাগেও বণিক মহলকে আহ্বান করেছেন তিনি।পশ্চিমবঙ্গের মৎস্য এবং মৎস্য বন্দর মন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী বলেন, মৎস্য চাষ পড়েছিল সেই পুরনো আমলে তাই মৎস্য চাষের গতি ছিল খুব অল্প। তাকে আধুনিকিকরণ করার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এবং সে প্রশিক্ষণ এখনো চলছে। না জেনে চাষ করলে বিপদ বাড়ে তাই জেনে বুঝে চাষ করাই উচিত। তিনি বলেন যারা মৎস্য চাষ নিয়ে উচ্চতর শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছেন তাদেরকেও হাতে-কলমে কাজ করবার জন্য উৎসাহ দিচ্ছে সরকার তিনি তার ব্যক্তিগত প্রচেষ্টাতে তাদেরকে পুকুরে নেমে চাষ করবার পথ দেখাচ্ছেন যাতে তাদের অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পায়। তিনি বলেন মেদিনীপুরের ময়নাতে বৃষ্টির পরে জল নামত না তাই সেখানে সকলেই মাছ চাষে নিযুক্ত করেছিল নিজেদের। কিন্তু কয়েক বছর পর দেখা গিয়েছে, তারা মাছের যে খাবার দেয় সেই খাবার পুকুরের তলায় পড়ে গিয়ে পুকুরের মাটি দূষিত হয়েছে এবং সব মাছ মরে যাচ্ছে। তাই এ বিষয়ে নতুন ভাবনা নিয়ে আসা হয়েছে ভাসমান খাদ্যের এই ভাসমান খাদ্য সত্যি উপকার করছে মৎস্য চাষে। বিজ্ঞান ভিত্তিক চাষে মনোযোগ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন মাটি পরীক্ষা কার এবং খুব শীঘ্রই মাছের মান দেখবার জন্য  পরীক্ষাগারের সূচনা হবে। ময়নার এই মৎস্য চাষ কে মডেল হিসেবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রী এগিয়ে দিয়েছিলেন কিন্তু তা যে খুব একটা সুখকর হয়নি তা মন্ত্রীর কথাতেই বোঝা গেল সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সে বিষয়ে তেমন উত্তর দিতে চাননি। প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, মাংস উৎপাদনেও এগিয়ে চলেছে সরকার তিনি বিশেষভাবে বলেন এ গত বিশ্বকাপ খেলা যা কাতারে হয়েছিল সেখানে মাংস রপ্তানি করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই চাষ যে কর্মসংস্থানের ও দিশা দেখাবে তা তিনি দৃঢ়ভাবে তুলে ধরেন, তিনি আরো বলেন প্রায় ১০০ কোটি  অবধি উৎসাহ ভাতা দেওয়া হয়েছে পোল্ট্রি ব্যবসায় এবং পশু চাষে। তিনি বণিক সভার সদস্যদের আহ্বান জানান এ বিষয়ে তাদের মূল্যবান অভিজ্ঞতা প্রদান করবার জন্য। বণিক সভার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন প্রতীক চৌধুরী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here