সুভাষ চন্দ্র দাশ, বাসন্তী –
ডাঙায় বাঘ আর জলে কুমির। প্রতিনিয়ত লড়াই করে বসবাস করতে হয় সুন্দরবন বাসীদের।সেই সুন্দরবনের এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শুরু হল ডিজিটাল এটেনডেন্স পরিষেবা।উল্লেখ্য সৎ উদ্দেশ্য এবং সৎ ইচ্ছা থাকলেও কি না করা যায়।এবার তারই প্রমাণ দিলেন প্রত্যন্ত সুন্দরবনের বাসন্তী ব্লকের রাণীগড় সি এস প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মমতা নস্কর বাগ ।যেখানে রাজ্যের বিভিন্ন সরকারী স্কুল গুলির ভগ্নদশা,পরিকাঠামোর অভাবে ধুঁকছে, ছাত্রছাত্রীরা সরকারী স্কুল গুলি থেকে মুখ ফিরিয়ে বেসরকারী স্কুলে ভর্তি হচ্ছে।ঠিক সেই কঠিন মুহূর্তে প্রত্যন্ত সুন্দরবনে গ্ৰামের স্কুলে ডিজিটাল এটেনডেন্স চালু করে সকলকেই অবাক করলেন প্রধান শিক্ষিকা।বুধবার দুপুরে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই ডিজিটাল এটেনডেন্স এর সূচনা।সূচনা করেন বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক দুর্গাদাস মিদ্দ্যা ও চন্দন চক্রবর্তী।অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাহিত্যিক শ্যামল ভট্টাচার্য,সাহিত্যিক শুভ্রেন্দু রায়চৌধুরী,শিক্ষারত্ন প্রাপ্ত প্রাক্তন শিক্ষক বিবেকানন্দ পাল , বিশিষ্ট সমাজসেবী স্বপন পট্টনায়েক, বাসন্তী পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য দিলীপ নস্কর,জ্যোতিষপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ইয়াস্মিন মোল্লা,সেখ সফিক সহ বিশিষ্ট ব্যক্তি।ডিজিটাল এটেনডেন্স প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মমতা নস্কর বাগ জানিয়েছেন, শিশুরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত হল কিনা তা নিয়ে চিন্তায় থাকেন তাদের অভিভাবকরা।আমাকে তারা বারবার ফোন করে খবর জানার চেষ্টা করেন।আমি সবসময় ফোন ধরতে পারিনা ,ফলে শিশুরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত হল কি না সেই নিয়ে চিন্তিত থাকেন অভিভাবকরা।তাই সে বিষয়টি আমাকে ভাবিয়ে তোলে। স্কুলের পরিচালন কমিটির সাথে কথা বলে ডিজিটাল এটেনডেন্স পরিষেবা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।এই ডিজিটাল এটেন্ডেন্স চালু হওয়ায় শিশুরা কখন বিদ্যালয়ে আসছে বা কখন ও বিদ্যালয় থেকে বাড়িতে ফিরছে তা এসএমএস এর মাধ্যমে তাদের অভিভাবকদের ফোনে পৌঁছে যাবে।ফলে অনেকটাই নিশ্চিত হতে পারবেন শিশুদের অভিভাবকেরা।’মমতা নস্কর বাগ আরো জানান, ‘বেসরকারি স্কুলের ছেলেমেয়েরা পোশাক পরিচ্ছদের সাথে টাই ও পরে।আমাদের বিদ্যালয়ের ছেলে মেয়েরা যাতে এগুলো দেখে মনখারাপ না করে ।তাই তাদের কে একটি করে টাই এর ব্যবস্থা করা হয়েছে।তিনি বলেন সরকারী মিড ডে মিলের সাথে সাথে ,ছাত্রছাত্রীদের পোশাক বইখাতা সবই দিচ্ছে।তাহলে ছাত্র ছাত্রীরা কেন সরকারী স্কুলে আসবে না?’বিশিষ্ট সমাজসেবী স্বপন পট্টনায়েক বলেন, যেভাবে একের পর এক সরকারী স্কুল গুলি বন্ধ হতে বসেছে ,সেখানে মাত্র ১৭১জন ছাত্রছাত্রীকে নিয়ে এমন একটি উদ্যোগ কে সাধুবাদ না জানিয়ে থাকা যায় না।’অন্যদিকে শিক্ষারত্ন প্রাপ্ত প্রাক্তন শিক্ষক বিবেকানন্দ পাল বলেন, ‘প্রত্যন্ত গ্ৰামের একটি স্কুলে এমন পরিষেবা চালু করা সত্যি গর্বের বিষয়।এই পরিষেবা চালুর ফলে একদিকে শিশুরা যেমন বিদ্যালয়মুখী হবে।অন্যদিকে অভিভাবকেরা ও বেসরকারি স্কুলে ছেলেমেয়েদের পাঠানোর থেকে সরকারী স্কুলে পাঠাতে আগ্ৰহী হবেন।’