ক্রেতা ও বিক্রেতাদের একই ছাদের তলায় আনতে এবার হস্তশিল্পমেলার আয়োজন করল নাবার্ড। নিউটাউন মেলা গ্রাউন্ডে ২৪ নভেম্বর থেকে শুরু হল “জশন-এ-কারিগরী: নাবার্ড হস্তশিল্পোৎসব।” চলবে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। মেলার উদ্বোধন করেন ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আঞ্চলিক অধিকর্তা আর কেশবন।নাবার্ডের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন তিনি।নাবার্ডের -এর চিফ জেনারেল ম্যানেজার ঊষা রমেশ জোর দেন গ্রামীণ শিল্পীদের পণ্য বিপনণের জন্য উপযুক্ত প্ল্যাটফর্ম তৈরির উপরে। কীভাবে ক্রেতাদের পছন্দের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রান্তিক ভৌগোলিক অঞ্চলে বসবাসকারী গ্রামীণ শিল্পীরা নিজেদের বিকশিত করতে পারেন সেই ব্যাপারে তিনি বিশদে জানান । গ্রামীণ শিল্পীদের উৎপাদন বৃদ্ধির ব্যাপারে উৎসাহ দিতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক, আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাঙ্ক ও সমবায় ব্যাঙ্কগুলির প্রতিনিধিরা।
উদ্বোধনী ভাষণে নাবার্ডের কাজের প্রশংসা করে, শ্রী আর কেশবন কৃষি-বহির্ভূত সেক্টরে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির গুরুত্বের উপর জোর দেন। তিনি ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা কারিগরদের আরও উৎসাহিত করেন। শ্রী অরূপ কুমার, সিজিএম, সিডবিআই তার বক্তৃতায় গ্রামীণ কারিগরদের উন্নতি এবং ক্ষুদ্র-উদ্যোগ বৃদ্ধির জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের ঋণের প্রাপ্যতার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি গ্রামীণ কারিগরদের উন্নতিতে একসাথে কাজ করার জন্য নাবার্ড এবং সিডবি-এর মতো সংস্থাগুলির মধ্যে সমন্বয় সাধনের উপর জোর দেন।এছাড়াও, শ্রী বি কে ত্রিপাঠি, সিভিও, কোল ইন্ডিয়া এবং শ্রী অরবিন্দ কুমার সরকার, যুগ্ম পরিচালক, বি আই আর ডি,কলকাতা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।নাবার্ডের কলকাতা অফিসের জেনারেল ম্যানেজার দীপমালা ঘোষ বলেন, গ্রামীণ মহিলাদের আরো বেশি আর্থিকভাবে স্বনির্ভর করে তুলতেই এই উদ্যোগ।ন‘দিনের এই মেলায় রাজ্যের বিখ্যাত তাঁত ও হস্তশিল্প এবং অনন্য পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি হচ্ছে। মেলায় ২৪টি রাজ্যের ১৩০ জন শিল্পী উপস্থিত হয়েছেন। অন্যান্য হস্তশিল্পের পাশপাশি রয়েছে তসর শাড়ি, কুনবি শাড়ি, কোসা কটন, পানি থানি পেন্টিং, বেঙ্কটগিরি হ্যান্ডলুম শাড়ি, কাঠের কাজ, বিভিন্ন ধরনের হাতে তৈরি গয়না, ডোকরা, মিথিলা পেন্টিং, গ্লাস মোজা,ইক ল্যাম্প প্রভৃতি।এক্সক্লুসিভ “জিআই প্যাভিলিয়নে” থাকছে পশ্চিমবঙ্গের জিইআই ট্যাগ পাওয়া পণ্য যাতে এব্যাপারে দর্শক থেকে শিল্পী – সকলেই জানতে পারেন।ভারত তো বটেই, পশ্চিমবঙ্গের প্রায় প্রতিটি জেলায় নিজস্ব ঐতিহ্য রয়েছে। যেমন বাঁকুড়ার ঘোড়া, ধনেখালির তাঁত, মেদিনীপুরের পিংলার পটচিত্র, দুই দিনাজপুরের বাঁশের কাজ, বর্ধমানের নতুনগ্রামের কাঠের পেঁচা, মজিলপুরের বাবুপুতুল প্রভৃতি। শিল্পের ঐতিহ্য থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শিল্পীরা দাম পান না। ক্রেতাদের পক্ষেও সারা বাংলা তথা ভারত ঘুরে পছন্দের জিনিস কেনা সম্ভব হয় না। তাই এই উদ্যোগ বলে জানানো হয়েছে নাবার্ডের পক্ষ থেকে। অফ ফার্ম প্রোডিউসার অর্গানাইজেশনের মাধ্যমে তারা পণ্য বিক্রিতে সাহায্য করতে শুরু করেছে স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও এফপিওগুলির মাধ্যমে। গ্রামে উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করার জন্য প্রাথমিকভাবে তারা বেছে নিয়েছিল গ্রামের হাট ও বাজার। তবে এখন সেই গণ্ডী পার করে যোগ দিচ্ছে বিভিন্ন মেলায়। এজন্য এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে মাল নিয়ে যাওয়ার সুযোগও করে দিচ্ছে শিল্পীদের।ক্রেতাদের সুবিধার্থে এই মেলায় বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাংক একটি বিজনেস করেসপন্ডেন্ট পয়েন্ট এবং ইউকো ব্যাংক মোবাইল এটিএম এর ব্যাবস্থা করেছে।