Thursday, December 26, 2024
spot_img

দুই জেলায় বাড়ছে সাপের কামড়,সাপের কামড় খেয়ে চিকিৎসার জন্য খুলনা থেকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে এলেন মহিলা

সুভাষ চন্দ্র দাশ,ক্যানিং – প্রতিনিয়ত বাড়ছে সাপের কামড়। পাশাপাশি ওঝাদের দাপটে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও।শুধুমাত্র ক্যানিং মহকুমা এলাকায় গত দুমামে সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার খুলনা’র বাসিন্দা পেশায় হাসপাতালের ঝাড়ুদার বছর ৪২ এর সন্ধ্যা আড়ি। মঙ্গলবার রাতে খাওয়া-দাওয়া করে ঘুমিয়ে ছিলেন। বিছানার মধ্যে তাঁর হাতে কামড় দেয় বিষধর কালাচ সাপ। তিনি কোন কিছুই বুঝতে পারেননি। বুধবার যথারীতি হাসপাতালের কাজে যান। সেখানে আচমকা বেলা এগারোটা নাগাদ অসুস্থ হয়ে পড়েন। মুহূর্তে সন্দেশখালি গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসকরা সন্ধ্যাদেবীর প্রাথমিক চিকিৎসা করেন। পরিস্থিতি ভালো নয় বুঝতে পেরে চিকিৎসকরা কলকাতার চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন। প্রত্যন্ত খুলনা থেকে ওই মহিলা কে তার পরিবারের লোকজন সুন্দরবনের ডাঁসা ও রায়মঙ্গল নদী দুটি পারাপার হয়ে দুর্গম পথ অতিক্রম করে কলকাতার উদ্দেশ্য রওনা দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেন। ইতিমধ্যে আচমকা ওই মহিলার পরিবারের সদস্যরা ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের সুপার ডাঃ অপূর্বলাল সরকার ও সর্প বিশেষঞ্জ ডাঃ সমরেন্দ্র নাথ রায়ের সাথে যোগাযোগ করেন।ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকরা রোগীর অবস্থা শুনে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসতে বলেন। প্রায় তিনঘন্টার পথ অতিক্রম করে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে রোগী পৌঁছায় বুধবার রাতে। ততক্ষণে রোগীর অবস্থা বেশ সংকটজনক। ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকরা রোগীর অবস্থা দেখে বুঝতে পারেন সাপে কামড় দিয়েছে।ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের সিসিইউ বিভাগের চিকিৎসক অনুপম হালদার তড়িঘড়ি সিসিইউ তে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা শুরু করেন।এ পর্যন্ত ওই মহিলা কে সাপে কামড়ানো প্রতিষেধক ৪০ টি এভিএস দেওয়া হয়েছে।তিনি সুস্থ হওয়ার পথে।
মগরাহাট থানার ধামুয়া‘র আলিসা গাজি পাড়ার বাসিন্দা রাজ্জাক সেখ।বৃহষ্পতিবার সকালে তিনি রাস্তার পাশে রাখা কাঠ সরিয়ে অন্যত্র রাখচ্ছিলেন। আচমকা তার বাম পায়ে দৌড়ে এসে কামড় বসায় বিষধর একটি চন্দ্রবোড়া সাপ।মুহূর্তে সাহসের উপর ভর করে ওই যুবক সাপটি ছাড়িয়ে প্রতিবেশী সঙ্গীসাথীদের নিয়ে সোজা ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে যায় চিকিৎসার জন্য।আচমকা সাপ হাতে যুবক কে হাসপাতালে ঢুকতে দেখে তাজ্জব হয়ে যায় চিকিৎসকরা।সাপে কামড় দিয়েছে জানতে পেরে শুরু হয় যুবকের চিকিৎসা।বর্তমানে ওই যুবক সুস্থ রয়েছে। অন্যদিকে দীর্ঘপথ অতিক্রম করায় বিষধর চন্দ্রবোড়া সাপটি মারা যায়।
বৃহষ্পতিবার বিকালে বাড়িতে ইট গুছিয়ে রাখার কাজ করছিলেন বাসন্তী থানার আমঝাড়া গ্রামপঞ্চায়েতের ৮ নম্বর তিতকুমার গ্রামের কুদ্দুস খান। সেই সময় আচমকা একটি বিষধর সাপ তার ডান হাতে ছোবল মারে। সাপটি মেরে ফেলে তড়িঘড়ি চিকিৎসার জন্য ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে আসে ওই যুবক। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে।
ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের সর্পবিশেষঞ্জ চিকিৎসক সমরেন্দ্র নাথ রায় বলেন “বর্ষাকালে সাপের উপদ্রব বাড়ে। একটু সতর্ক ভাবে চলাফেরা করা উচিৎ। সাপে কামড় দিলে যত দ্রুত সম্ভব রোগী কে নিকটবর্তী সরকারী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া জরুরী।কারণ সাপে কামড় দিলে চিকিৎসা ক্ষেত্রে প্রথম ১০০ মিনিট অত্যন্ত জরুরী।তবে সঠিক সময়ে হাসপাতালে আসলে কোন সমস্যা হয় না।”

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

1,231FansLike
10FollowersFollow
4SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles